মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৮ অপরাহ্ন
দীর্ঘদিন পরে পূর্ণমন্ত্রী পেল সুনামগঞ্জ জেলাবাসী। বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষজন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য সজ্জন ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ এমএ মান্নানকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ গঠনের এই খবর সুনামগঞ্জে এসে পৌঁছলে তাঁর নির্বাচনী এলাকাসহ জেলার সর্বস্তরের মানুষ আনন্দিত হন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন অনেকে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ দলমত নির্বিশেষে জেলার সাধারণ মানুষ এমএ মান্নানকে পূর্ণ মন্ত্রী করায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। সেই সাথে এমএ মান্নানের মন্ত্রীত্বের পথচলায় শুভকামনা জানান। এমএ মান্নান গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী হওয়ায় জাতীয় উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা হাওর-ভাটি এবার নতুন উচ্চতায় আসীন হবে এমনটা প্রত্যাশা করছেন জেলাবাসী।
এমএ মান্নান গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার আসনে সিলেট বিভাগের মধ্যে কোন ঝামেলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরই তার নির্বাচনী এলাকা জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জের মানুষসহ জেলার সাধারণ মানুষ মন্ত্রিসভায় তাকে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে আশা করছিলেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে প্রথমে সরকারে ক্রয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি করা হয়েছিল। পরে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে শেখ হাসিনার আস্থা অর্জন করেছিলেন। তিনি সুনামগঞ্জ জেলায় যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে একজন আলোচিত ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।
কয়েক বছর আগে সুরমা নদীতে নির্মিত সেতুটির কাজ দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর তার মাধ্যমে পূর্ণতা পেয়ে উদ্বোধন হয়েছিল। এর সুফল ভোগ করছেন জেলাবাসী। কুশিয়ারা নদীর উপর প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে সেতু। এই সেতুর প্রায় ৬৫ ভাগ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুটির কাজ শেষ হলে সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকা যেতে জেলাবাসীর প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় কম লাগবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এতে স্থানীয় যোগাযোগ সহজলভ্য হওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতে বিশেষ সুফল বয়ে আনবে বলে ধারণা করা হয়। তাছাড়া চলতি অর্থ বছরে তিনি একনেকে বঙ্গবন্ধু সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, নার্সিং কলেজ ও টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান অনুমোদন করিয়ে নির্মাণের পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন।
ছাতক-সুনামগঞ্জ রেললাইনও প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকায় নিয়ে এসেছেন তিনি। পরিকল্পনা আছে সরকারের এই মেয়াদে সুনামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ সড়ক ও রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণের। নির্বাচনের আগে তিনি সুনামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ রেললাইন ও সীমান্ত সড়কসহ হাওরের যুগোপযোগী উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন। তাছাড়া হাওরের উন্নয়নে যুগোপযোগী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে তার বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এখন তিনি মহাজোট সরকারের পূর্ণ মন্ত্রীত্ব পাওয়ায় তার পরিকল্পিত স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন ঘটবে বলে মনে করেন জেলাবাসী।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাছিত সুজন বলেন, আমাদের নেতাকে পূর্ণমন্ত্রী করায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই। তিনি তার মন্ত্রিসভায় যোগ্য ও সৎ নেতৃত্ব বেছে নিয়েছেন।
এখন আমাদের নেতাকে নিয়ে আমরা পুরো জেলার সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই। আমাদের নেতা এমএ মান্নানের নেতৃত্বে উন্নয়নে অনন্য হবে সুনামগঞ্জ জেলা।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা কমরেড অমর চাঁদ দাস বলেন, এমএ মান্নান একজন সৎ ও নির্লোভ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এমন একজন নেতাকে পূর্ণমন্ত্রী করায় আমাদের হাওরের সব শ্রেণিপেশার মানুষজন খুশি।
বিশেষ করে তিনি গত দশ বছর ধরে শুধু নিজের এলাকাই নয় পুরো জেলায় গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন করেছেন। এবার জাতীয় উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা আমাদের হাওর-ভাটিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন এই আশা করছি আমরা।