বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ পূর্বাহ্ন
হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ না হওয়ার প্রতিবাদে এবং বর্ধিত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ সম্পন্নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন। কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বানে শনিবার জেলার উপজেলাগুলো এবং বিভিন্ন ইউনিয়নে একযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। বর্ধিত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ সম্পন্ন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয় মানববন্ধন থেকে।
শনিবার সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুখেন্দু সেন-এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহিন চৌধুরী শুভ’র সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল ভট্টাচার্য, এমরানুল হক চৌধুরী, একে কুদরত পাশা, সিনিয়র সদস্য ডা. মুরশেদ আলম, বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রুহুল আমিন, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন সদর উপজেলা শাখার সদস্য সচিব শহীদ নুর আহমদ, যুব আন্দোলনের নেতা আসাদ মনি, দুর্যোধন দাস দুর্জয় প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাওরের বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় বোরো ফসল নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে দুর্নীতি-অনিয়ম থামছে না। হাওরবাসী বার বার এর প্রতিবাদ করলেও সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ছে না। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো ৬০ ভাগও শেষ হয়নি। বাঁধ নির্মাণের সময় সীমা আরো ১৫ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও কাজের অগ্রগতির কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। বাঁধের কাজে নিয়োজিতদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও গাফিলতির কারণে যদি ফের হাওর ডুবির ঘটনা ঘটে তাহলে হাওরের সাধারণ কৃষকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
বক্তারা আরো বলেন, বাঁধের কাজ শুরু থেকেই লুকোচুরি চলছে। আমরা দাবি জানিয়েছিলাম, গণশুনানির মাধ্যমে পিআইসি গঠন করতে। কিন্তু তা হয়নি। খেয়াল-খুশি মতো পিআইসি গঠন করে খেয়াল-খুশি মতো বাঁধের কাজ হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করে সরকারের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। যদি এবার হাওরে বিপর্যয় হয় তাহলে হাওরবাসী কাউকে ছাড়বে না।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসূচি চলাকালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্ররা মিছিল সহকারে মানববন্ধনে যোগ দিয়ে একাত্মতা পোষণ করে। তারা বলেন, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে হাওরের কৃষকের সন্তানরা লেখাপড়া করে। যদি কারো কারণে ২০১৭ সালের মতো হাওরে বিপর্যয় হয় তাহলে সুনাগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে কঠোর আন্দোলন শুরু করা হবে। ‘বিশ্বজন’ নামের একটি সামাজিক সংগঠনও মানববন্ধনে একাত্মতা ঘোষণা করে।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা বিকাশ রঞ্জন চৌধুরী ভানু, রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, চন্দন রায়, কোষাধ্যক্ষ প্রদীপ পাল, সিনিয়র সদস্য অধ্যক্ষ মো. রবিউল ইসলাম, মানব চৌধুরী, রাজু আহমদ, স্বপন কুমার দাস, রবীন্দ্র চন্দ্র দেব, অ্যাড. নাসির উদ্দিন আফিন্দী, সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক দুলাল মিয়া, টিআইবি’র আঞ্চলিক ম্যানেজার মাহবুব হোসেন, বিশ্বজনের নেতা কর্ণ বাবু দাশ, সুবল সরকার প্রমুখ।