শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১২ পূর্বাহ্ন
আকরাম উদ্দিন
সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহীমপুর গ্রামের সুরমা নদীর তীর, সদরগড় ও অক্ষয়নগর গ্রামের পাশে ধোপাজান চলতি নদীর তীরে যত্রতত্র বেআইনীভাবে ডাম্পিং করা বালু-পাথর ৭ দিনের মধ্যে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। মঙ্গলবার প্রশাসনের উদ্যোগে সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে এ বিষয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।
প্রচারণায় উল্লেখ করা হয়েছে, বালু সরিয়ে না নিলে বালুর মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বালু-পাথর সরাতে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে ধোপাজান চলতি নদীর পাড়ের অক্ষয়নগর এলাকায় ভূমি ধসের ঘটনা ঘটে। দেলোয়ার হোসেন ও বাবুল মিয়ার বালু’র স্তুপসহ নদীতে ধসে পড়ে ওই দিন । গত বুধবার সন্ধ্যায় ইব্রাহীমপুর গ্রামের নদীর তীরে ডাম্পিং করা আরেকটি বালুর স্তুপ ধসে পড়ে। সেই সাথে গাছ-পালাসহ নদীর তীরের একটি বড় অংশও নদীতে বিলীন হয়। ভূমি ধসের ঘটনায় এখন দোকাটপাট, বাড়ি-ঘর ও গাছপালা হুমকির মুখে পড়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে অক্ষয়নগর এলাকায় ধোপাজান চলতি নদীতে দুই স্থানে ভূমি ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে চলতি নদীর একটি অংশ প্রায় ভরাট হয়ে যায়। এছাড়া সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের জগাইরগাঁও, হবতপুর এবং শ্রীপুর এলাকায় সুরমা নদীর তীরেও একাধিক স্থানে ভূমি ধসের ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবৈধভাবে বালু-পাথর ডাম্পিং করার কারণে বিপজ্জনক অবস্থার সম্মুখীন হয়েছেন বিভিন্ন স্থানের নদী পাড়ের বাসিন্দারা। বালু-পাথর ডাম্পিংয়ের কারণে ভূমি ধস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে পরিবেশ প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য ছদরুল আলম সাইফুল বলেন,‘নদীর তীরে অবৈধভাবে বালু ডাম্পিং করার কারণে বিভিন্ন স্থানে ভূমি ধসের ঘটনা ঘটছে। দ্রুততার সাথে এর প্রতিকার হওয়া একান্ত প্রয়োজন।
সুনামগঞ্জ জেলা পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাসের বলেন,‘অপরিকল্পিতভাবে উঁচু করে বোমা মেশিন দিয়ে বালু-পাথর ডাম্পিংয়ের কারণে নদীর পাড়ে ভূমি ধসের ঘটনা ঘটেছে। সুরমা নদীসহ অন্যান্য নদীর পাড়ে এই ভূমি ধসের ঘটনা ঘটেই চলেছে ,আরও ঘটবে। নদীর তীর রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি আমাদের।’
সদর ইউনিয়ন উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কাজী শামছুল হুদা সোহেল বলেন,‘যত্রতত্র বেআইনীভাবে ও অপরিকল্পিতভাবে বালু ডাম্পিং করায় ভূমি ধসের ঘটনা ঘটছে। ভূমি ধসের ঘটনা প্রতিরোধ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে বালু সরিয়ে নেওয়ার জন্য বালু মালিকদের জানানো হচ্ছে। ৭ দিনের মধ্যে নিজ উদ্যোগে এই বালু সরিয়ে না নিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন,‘নদীর তীরে যত্রতত্র বেআইনীভাবে ও অপরিকল্পিতভাবে যারা বালু ডাম্পিং করেছেন, তাদের তালিকা করা হয়েছে। তাদের ডাম্পিংকৃত বালু ৭ দিনের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দেয়া হয়েছে। এজন্য মাইকিং করে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। বালু-পাথর স্তুপের মালিকদের নিজ উদ্যোগে এসব বালু সরাতে হবে। এই নির্দেশ অমান্য করলে বালু-পাথর মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’