বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ পূর্বাহ্ন
রেজাউল করিম :
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর এবং সুরমা ইউনিয়নের আওতাধীন নারায়ণতলা-হালুয়ারঘাট সড়ক দিয়ে দিনরাত পিকআপ ভ্যান দিয়ে পাথর বহন করায় সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। তাছাড়া সপ্তাহের প্রতি রোববার এবং বৃহস্পতিবারে স্থানীয় মঙ্গলকাটা বাজারে তীব্র যানজটের কারণে বাজার ব্যবসায়ীসহ সাধারণ ক্রেতাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
অপরদিকে, বেপরোয়া গতির পাথরবাহী পিকআপ ভ্যানের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা এই সড়ক দিয়ে ভীতি নিয়ে চলাচল করছেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি ব্যবহার করে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। তবে এ সড়কটি এখন এলাকার মানুষের কাছে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেপরোয়াভাবে পাথরবাহী পিকআপ ভ্যান চলাচলের ফলে ভীতি নিয়ে যাতায়াত করতে হয় স্থানীয়দের। আর এই পাথরবাহী পিকআপের কারণেই নারায়ণতলা-হালুয়ারঘাট সড়কটির বেহাল দশা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এর প্রতিবাদ করেও স্থানীয় লোকজন এসব গাড়ি চলাচল প্রতিরোধ করতে পারছেন না। ব্যবসায়ীসহ পাথর বহনকারী পিকআপের মালিক ও চালকরা কারো কথায় কর্ণপাত না করে তাদের ব্যবসা দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অগণিত পিকআপ গাড়িতে করে চলতি নদীর ডলুরা থেকে পাথর বোঝাই করে হালুয়ারঘাট নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পাথর ব্যবসায়ীরা, নদীপথ ব্যবহার না করে গ্রামীণ সড়ক পথ ব্যবহার করে দিনরাত পিকআপ ভ্যান দিয়ে পাথর বহন করছেন। এতে করে একদিকে সড়কের যেমন বেহাল অবস্থা হচ্ছে, তেমনি এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লোকজন ‘দুর্ঘটনা’ আতঙ্কে থাকেন। রোববার এবং বৃহস্পতিবারে স্থানীয় মঙ্গলকাটা বাজারের অন্যতম গলিপথে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। এতে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতাসাধারণ পড়েন বিপাকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নারায়ণতলা-হালুয়ারঘাট সড়কের জাহাঙ্গীরনগর থেকে কামারগাঁও পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ভাঙাচুরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত।
ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদির বলেন, গ্রামীণ সড়ক এবং বাজার দিয়ে এভাবে বেপরোয়া গাড়ি চলাচল করলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। আমরা এ থেকে রেহাই পেতে চাই।
মঙ্গলকাটা বাজার সেক্রেটারি বোরহান উদ্দিন বলেন, গাড়ি চালকদের বলেও কোন লাভ হয় না। প্রতি হাটবারে আমাদের বাজারে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। কখন কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটে সে আতঙ্কে থাকি আমরা।
ইয়াকুবিয়া দাখিল মাদরাসার সাবেক সুপার কাজী শাহেদ আলী বলেন, দিন-রাত পাথরবাহী এসব গাড়ি চলাচলের ফলে অসহনীয় শব্দের সৃষ্টি হয়। রাতে আমাদের রাতে ঘুম হয় না। আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে আমরা রীতিমত আতঙ্কে থাকি। প্রতি হাটবারে বাজারে তীব্র যানজটেরও সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সড়কের বেহাল অবস্থার কারণও এইসব পাথরবাহী পিকআপ ভ্যান। আমাদের দাবি, প্রশাসনিকভাবে এসব যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হোক।
এলাকার আব্দুছ ছোবহান মাস্টার বলেন, পাথর বহনকারী পিকআপের শব্দে আমাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে লেখাপড়া করতে পারেনা। মঙ্গলকাটা বাজারে দেখা দেয় তীব্র যানজট। সড়ক পথ ভেঙেচুরে ফেলছে এসব পাথরবাহী পিকআপ। প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি গাড়ি দিনরাত পাথর বহন করে দাপটের সাথে চলছে।