বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২২ পূর্বাহ্ন
আব্দুল্লাহ মারুফ ::
স্বাধীনতা কেনো প্রয়োজন, স্বাধীনতা হীন মানুষ বদ্ধ ও লালিত পালিত হাতির ন্যায়। যখন একটি হাতি লালিত পালিত হয় তখন সেই হাতি ছোট থাকে। তাকে বেঁধে রাখে একটা শক্ত কিছু দিয়ে যাতে করে ছোটতে বা পালাতে না পারে। সেই হাতিটি ছোটাছুটি করে কিন্তু পালাতে পারে নাহ। এর মধ্যে অধিকার আর নির্যাতনের কারণে কতো চোখের অশ্রু ঝড়ায় সে কথা সৃষ্টিকর্তায় ভালো জানেন। যখন হাতি বড় হলো শরীরের সাথে শক্তিও বাড়লো। কিন্ত সেই মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলে, হারিয়ে ফেলে সেই আগের মতো পালাতে বা ছোটে যাওয়ার অদম্য আশা। দাসত্বের এক শিকল ঘাড়ে চাপিয়ে নেয়। এমনটা হওয়ার কারন কি জানো? সেই ছোটবেলা সে ছোটাছুটি করেছে কিন্তু ছুটতে পারে নি সেই ভাবনায় এখনো আছে যে সে ছুটতে পারবে নাহ। আফসোস ,যদি একবার চেষ্টা করে দেখতো! দেখলেও বা কি হবে দাসত্বের শিখলতো পায়ে।
তবে কাকতালীয় মজার ব্যাপার কি জানো ?
আমাদের সমাজ ব্যবস্থার সাথে সেই হাতি লালনপালনের অদ্ভুত সাদৃশ্য আছে। সমাজ পরিবার আমাদের সাথে একি আচরণ করছে শিশুদের আসল শক্তিটা ধ্বংস করে দিচ্ছে। ধ্বংস করে দিচ্ছে আমাদের জ্ঞান আর মানসিক সক্ষমতা। ধ্বংস করে দিচ্ছে আমদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী।
হাতির সাথে সাদৃশ্য এই কারনে, যখন ছোট থেকেই একটা মানুষ কন্ট্রোল কন্ট্রোল কন্ট্রোল এর মধ্যে পোষাপুশু-পাখির মতো বড় হয় ,তখন তার বড় হওয়াতে সমাজের,দেশের কিচ্ছু আসে যায় নাহ। তার সেই শক্তিও কোন কাজে আসে নাহ। যে নিজের স্বাধীনতা, সক্ষমতা সম্পর্কে অজ্ঞাত সে কি করে পরিবার সমাজ দেশ জাতির জন্য কাজ করবে। কিন্তু একটা জংলী হাতি দেখেছো। সে যেমন স্বাধীন ঠিক সেইরকম শক্তিশালী, বিচক্ষণ, বুদ্ধিমান, দলের প্রতি অনুগত, শত্রুর উপর আক্রমণাত্মক হয়। সে জানে তার স্বাধীনতা কি কোথায় কিভাবে রক্ষা করতে হয়।
ভেবে দেখেছো কি!
স্বাধীনতাহীন মানুষগুলো কোন পর্যায়ে আছে।
স্বাধীনতার মর্ম কি বুঝতে পারছো তো?
ভয় খাবার থেকেও বেশি খেয়েছি আমরা,ভয় দেখিও নাহ নৈতিকতা শিক্ষা দাও। ভুল করার সুযোগ দাও, ভুল শোধরানোর সুযোগ ও শিক্ষা উভয়টা দিতে সাহায্য করো।
মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন ঠিক। কিন্তু কর্মের স্বাধীনতা দিয়েছেন।
কোন কাজে পুণ্য আর কোন পথে পাপ অর্জন হয় রাস্তা দেখিয়ে মানুষ জাতিকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। পাপ যদি করো পাপি হয়েছে, সেইসাথে পাপের জন্য ক্ষমা চাইলে সেই পাপ মুছন হয়েছে। এখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
ভুল যদি করতেই না দাও সেটা ভুল করেছি বুঝবো কি করে।‘কথায় আছে:”শিখছো কোথায়,ঠেকছি যেথায়”।
সিংহ অবশ্যই দেখেছো ।
বনের রাজা সিংহ।কিন্তু আজকাল সিংহও পালন হচ্ছে
মানুষের বাড়িতে।যার পদবি বনের রাজা আর স্বভাব যার হিংস্র সে কি করে অন্যের দাসত্ব গ্রহণ করেছে। ছোটবেলা থেকে তাকে ননির পুতুল বানিয়ে বানিয়ে বড় করেছে তাই সে তার পরিচয় ভুলে গেছে।
মানুষের বিবেক কবে জাগ্রত হবে! মানুষ কখন বুঝবে! মৃত্যু যখন দরজায় কড়ানাড়বে তখন কি মানুষের বিবেকবোধ জাগ্রত হবে,আহা!এ কি করলাম। যদিও করে তাহলে কি হবে।“সময় গেলে সাধন হবে না”। কষ্ট হয় আমাদের এ দুর্দশা দেখে।
মহামহীয়ান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সকল সৃষ্টির উপর মানব জাতিকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন কোন দিক থেকে? শক্তি, ক্ষিপ্রতা, বেগ এইসব দিক থেকে কি মানব জাতি কে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন?
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন:মানবজাতিকে দুর্বল করে সৃষ্টি করেছি। (সুরা নিসা-২৮)
এখন প্রশ্ন হলো কোন দিক থেকে মানুষ শ্রেষ্ঠ ?
মানবজাতি সকল সৃষ্টির উপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করে জ্ঞানের কারনে। সৃষ্টিকর্তা মানব জাতিকে জ্ঞান দিয়ে সকল সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
আর আমরা সেই জ্ঞান এর কি ব্যবহার করছি।
সেই জ্ঞানকে প্রসারিত না করে গলা টিপে মারার ব্যবস্থা করছি।
ছি! ছি! ধিক্কার জানায় এমন সমাজ পরিবারের উপর।স্রষ্টার দেয়া জ্ঞানের অপব্যবহার করছো। হিসাবনিকাশের দিন জবাব দিবে কি করে ভেবে রেখেছো আশা করছি!
একে অপরেকে ভয় পাওয়া মানব জাতির স্বভাব হতে পারে না।
মানুষ একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, স্নেহ ,মায়া-মমতা, আদর-সোহাগ, ভালোবাসা ছাড়া আর কিছুই রাখতে পারে নাহ।
ভয়,হিংসা,পরশ্রীকাতরতা ও শত্রুতা মানব নামক মূর্খের স্বভাব।
যদি তোমার কিছু ভালো না লাগে তুমি জ্ঞানের ব্যবহার করেওতো ভালোটা করতে পারো। কিন্ত অন্যের ভালো তোমার সহ্য হয় না এ আবার কোন স্বভাব, কোন আদর্শ গ্রহণ করেছো।
“ভয় নয় নৈতিকতা শিক্ষা দাও”।
স্বাধীনতা দাও কিন্তু সে ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি। ভুল পথে গেলে ঠান্ডা মাথায় বুঝানো। তার বিবেক কে নাড়া দেওয়াই আসল উদ্দেশ্য।
স্বাধীনতাহীন মানুষ চারপায়ী পশুর থেকেও অধম।
যদি বুঝ হয় তাহলে ভালো আর এখনো যদি তোমাদিগদের বিবেকের টনক না নড়ে জাহান্নামে লাফ দাও তাতে আমার কিচ্ছু করার নাই।
আব্দুল্লাহ মারুফ, উদিয়মান তরুণ লেখক।