বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বিশ্ব নবীর আগমনে, সুরভিত পরিবেশে পুলকিত বিশ্ব আজীবন সম্মাননা পেলেন জনাব ওসমান গণি ও শফিকুর রহমান মধু মিয়া বৃষ্টির ধারায় মুছে যাক “রোজা রাখি, আল্লাহর হুকুম পালন করি, নিজে সুস্থ থাকি অপরকে সুস্থ থাকতে উৎসাহিত করি” মঙ্গলকাটা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার ‘MCTC’র এক যুগ পূর্তিতে আনন্দ ভ্রমণ ফেনিবিল ও কোনাপাড়া সমাজকল্যাণ যুব সংঘের অমর একুশে উদযাপন ‘আব্দুল গণি ফাউন্ডেশন’ মেধাবৃত্তি পরিক্ষা-২২ এর বৃত্তি প্রাপ্তদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত নারায়ণতলা মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জের ডলুরা বর্ডারহাটে অনিয়ম ও মাদক বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত তৃতীয় বারের মত অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো দাখিল ২০০৪ ব্যাচ এর মিলনমেলা

‘যাবো না’ স্লোগানে মুখর রোহিঙ্গা ক্যাম্প

‘যাবো না’ স্লোগানে মুখর রোহিঙ্গা ক্যাম্প

প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে টেকনাফের উনচিপাং এলাকার ২২ নম্বর ক্যাম্পে জড়ো করার পর তারা ‘ন যাইয়ুম, ন যাইয়ুম’ (যাবো না, যাবো না) স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে বলে জানিয়েছেন বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা আহরার হোসেন।

ঐ ক্যাম্প থেকে আগামী তিন দিনে প্রত্যাবাসিত হওয়ার জন্য ২৯৮ জন রোহিঙ্গার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের জানানো হয় যে তাদের জন্য অন্তত তিনদিনের খাবার দাবার ও জরুরি প্রয়োজনের দ্রব্যাদিসহ বাসে করে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়।

এরপর তাদের বাসে ওঠার আহবান জানালে ‘যাবো না’ বলে স্লোগান দেয়া শুরু করে তারা।

বিবিসি সংবাদদাতা আহরার হোসেন জানিয়েছেন বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় কয়েকজনের হাতে প্ল্যাকার্ড দেখা যায় যেখানে তারা মিয়ানমারের নাগরিকত্ব প্রদান, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে।

ফিরতে রাজী না রোহিঙ্গারা

প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য যেসব পরিবার তালিকাভুক্ত ছিল, বিবিসি বাংলার আহরার হোসেন তাদের কয়েকটি পরিবারের সাথে কথা বলেছেন।

একটি শরণার্থী ক্যাম্পের ১৬টি পরিবার প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্তদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিল।

কিন্তু সরেজমিনে অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিবিসি সংবাদদাতা আহরার হোসেন দেখতে পান যে ঐসব পরিবারের অধিকাংশের ঘরই তালাবন্ধ।

জোরপূর্বক প্রত্যাবাসিত হওয়ার আশঙ্কায় রোহিঙ্গারা ঘর ত্যাগ করেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিবিসি সংবাদদাতা আহরার হোসেন অপর একটি ক্যাম্পের কয়েকজন নারীর সাথেও কথা বলেন; যাদের পরিবারের সদস্যরাও জোরপূর্বক প্রত্যাবাসিত হওয়ার ভয়ে ঘর ত্যাগ করেছেন।

মি. আবুল কালাম জানান যে তারা সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছিলেন; কিন্তু জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রতিবেদন মোতাবেক রোহিঙ্গাদের পাঠানো তাদের অনুকূলে নেই।

জোরপূর্বক প্রত্যাবাসিত হওয়ার আশঙ্কায় রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে বল জানান সংবাদদাতা আহরার হোসেন।

গতকাল বুধবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার লোকজন রোহিঙ্গাদের সাথে দেখা করে তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুতি নিতে আহবান জানায়।

সেসময় রোহিঙ্গারা জানায় যে তারা বর্তমান অবস্থায় ফিরে যেতে চায় না।

দাবি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব না দেয়া হলে তারা ফিরে যেতে চায় না বলে জানিয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তাদের সুপারিশ অনুযায়ী অতিসত্বর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে বিবৃতি প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

প্রথম দফায় ২,২০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য শরণার্থী শিবিরে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বলে জানানো

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ৩০টি পরিবারের ১৫০ জন সদস্যকে প্রত্যাবাসিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন একটি ক্যাম্পে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

বান্দরবান জেলার ঘুনধুম পয়েন্ট থেকে প্রত্যাবাসনস শুরু হবে বলে নিশ্চিত করেন মি.কালাম।

‘তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে, আমরা প্রত্যাবাসন শুরু করার উদ্দেশ্যে সব ধরণের আয়োজন সম্পন্ন করেছি।’

তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বললেও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হতে দেরী হবে বলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃততে উঠে এসেছে ।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের শরণার্থী অধিকার বিষয়ক পরিচালক বিল ফ্রেলিক বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো শুরু করলে বাংলাদেশ খুবই দ্রুত আন্তর্জাতিক সমর্থন হারাবে।’

‘শরণার্থী শিবিরে সেনা মোতায়েন করার ঘটনা থেকেই বোঝা যায় যে ভীত রোহিঙ্গা সম্প্রদায় প্রত্যাবাসনে আগ্রহী নয়।’

গত মাসের শেষে রোহ্ঙ্গিা প্রত্যাবাসনের জন্য তৈরি করা জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় দফা বৈঠকের পর ঠিক হয় যে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন।

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে অস্থায়ী ক্যাম্পে ১৫০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে প্রত্যাবাসিত করা হবে।

সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ দু’টি অস্থায়ী প্রত্যাবাসন ক্যাম্পও তৈরি করেছে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রত্যাবাসন রোহিঙ্গাদের নিজেদের ইচ্ছায় হবে বলে বলা হলেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।

ম্পের একজন শরণার্থী হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেন, “এই প্রত্যাবাসন জোরপূর্বক এবং আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। ক্যাম্পের একটি মানুষও ফিরে যেতে চায় না।”

আরেকজন শরণার্থী হোয়াটসঅ্যাপে লিখেছেন যে কিছু পরিবারকে জোর করে অস্থায়ী প্রত্যাবাসন ক্যাম্পে পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের আশঙ্কা, ফিরে যাওয়ার পর তাদেরকে আটক করে রাখা হবে।

২০১২ সালে সহিংসতা ছড়িয়ে পরার পর বাস্তুচ্যুত ১ লক্ষ ২৪ হাজার রোহিঙ্গা ৬ বছর ধরে আটক রয়েছেন বলে জানায় রোহিঙ্গারা।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিল ফ্রেলিক বলেছেন, “রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যেই আন্তর্জাতিক সুনাম অর্জন করেছে, তা ধরে রাখতে তড়িঘড়ি প্রত্যাবাসন শুরু করে রোহিঙ্গাদের আবারো হুমকির মুখে ফেলা থেকে বিরত থাকা উচিত।”

মিয়ানমারের প্রস্তুতি

বিবিসি’র বার্মিজ বিভাগের সংবাদদাতা স ইয়ান নাইং জানান প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে তংপিয়ং লেটওয়া এলাকার অস্থায়ী ক্যাম্পে অবস্থান করছেন মিয়ানমারের অভিবাসন কর্মকর্তাসহ নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং চিকিতসকরা।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত মন্ত্রী বিবিসি বার্মিজের সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন প্রতিদিন শতাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছেন তারা।

সূত্র  : বিবিসি বাংলা


আপনার এ্যাড দিন

ফটো গ্যালালি

Islamic Vedio

বিজ্ঞাপন ভিডিও এ্যাড




© All rights reserved © 2018 angina24.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com