বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০২ অপরাহ্ন
সাগর কন্যা পটুয়াখালীর সর্ব দক্ষীণে অবস্থিত বঙ্গপ সাগরের কোলঘেষা দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালী।
গতকাল ছিল বছরের শেষ দিন। দিনটিকে স্মরণীয় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে “রাঙ্গাবালী ট্যুরিজম” ভ্রমণ পিপাসুদের নিয়ে আয়োজন করে গ্রান্ড মিট আপ-২০২১ এবং নতুন বছর ২০২২ কে স্বাগত জানানোর এক ব্যতিক্রমি অনুষ্ঠান।সারা বছরের দুঃখ,কষ্ট, এবং ভাল লাগা, না লাগা বিষয়গুলো পরস্পরের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য ব্যতিক্রমি এ আয়োজন।
এবারের গ্রান্ড মিট আপ – ২০২১ এ অংশ গ্রহণকারী সম্মানিত সদস্যরা হলেন মো.এনামুল ইসলাম,মো.জুনাইদ হোসাইন,মো.আইয়ুব হোসাইন,ফাহাদ খলিফা,নাজমুল ইসলাম,জিহাদ খলিফা,আরাফাত হোসাইন মেহেদী,হৃদয় ইসলাম,সাইদুর রহমান তানভীর,ইব্রাহিম মাহমুদ,মহিবুর রহমান নিবির,রেজাউল হাওলাদার,মাসরুর ইসলাম,মাহমুদ জামান ইমন,আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।এই আয়োজনে ছিল পারস্পরিক স্বাক্ষাৎ,ভ্রমণ,খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং একসাথে একই যায়গায় বসে খাবার গ্রহণ। দিনের সকল কর্মসূচি এবং যে যে গন্তব্যে ভ্রমণ করা হবে সে সকল বিষয়ের বিস্তারিত বর্ণনা সম্বলিত ম্যাুয়াল ও সাদা রংয়ের টি- শার্ট প্রদান করা হয় সম্মানিত সদস্যদের।
সারাদিন ব্যাপী এ আয়োজন শুরু হয় রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ থেকে। সেসময় সকলের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাঙ্গাবালী ট্যুরিজম, রাঙ্গাবালী ফাউন্ডেশন,উপকূল স্প্রোটিং ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং দূরবীন প্রকাশন এর প্রকাশক ও সমাজ সেবক,জিও পলিটিক্স বিশ্লেষক কলামিস্ট আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম।
তিনি বলেন মানুষের সুস্থতার জন্য সর্ব প্রথম যে জিনিসটি প্রয়োজন তা’হলো সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমত। বিশেষ করে একজন মানুষকে পরিপূর্ণ সুস্থ থাকতে হলে শারীরিক,মানসিক,আত্মিক ভাবে সুস্থ থাকতে হয়। শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন ব্যায়াম বা ফিজিও থ্যারাপি,আর মানসিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন ০ক্যাথারসিসি থ্যারাপি যা ভ্রমণের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব আর আত্মিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন মলিফিকেশন যা ধ্যান ও নিজ নিজ ধর্ম যথাযত ভাবে ধর্ম চর্চার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। মানুষ যখন সাগরের কাছে যায় কিংবা সুন্দর কোন ফুল,ফল, পাখি অথবা কোন মনোরম দৃশ্য দেখে তখন কেমন যেন একটি ভাল লাগার অনুভূতি তার মধ্যে কাজ করে।এই যে ভাল লাগার অনুভূতি তা মূলত মানুষের অটোনোমাস নার্ভাস সিস্টেমের কারণে।আর এখানেই হলো সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠত্ব।এই ভাল লাগার কারণে মানুষের মন ভাল থাকে,আর মন ভাল থাকলে শরীর ভাল থাকে, আর শরীর ভাল থাকলে ধর্ম চর্চা থেকে শুরু করে সব কাজই তখন ভাল লাগে।সুতারং সারা বছর একগুয়ে কাজ না করে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় ভ্রমণ করা উচিত। তাহলে শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি পৃথিবী সম্পর্কেও জ্ঞান অর্জন সম্ভব হবে।
এর পরে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন গ্রান্ড মিট আপ প্রোগ্রামের সভাপতি ও রাঙ্গাবালী সদর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম মাওলানা মো.আইয়ুব হোসাইন এবং যাত্রা শুরু হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালের মেধাবী শিক্ষার্থী জুনাইদ হোসাইন এর নেতৃত্বে।
প্রথমে অভিযাত্রী দল হাজির হয় বাংলা একাডেমী থেকে সাহিত্য ক্যাটাগরীতে-২০১৬ সালে পুরস্কার প্রাপ্ত অত্র উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের কাঁটাখালী গ্রামে নূরজাহান বোসের বাড়ীতে।সেখানে প্রত্যেকের হাতে থাকা ম্যানুয়াল থেকে তার জীবনী পাঠ করা হয় এবং সেখানকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় শেষে ফটোশেসনে অংশগ্রহণ করেন।এর পরে অভিযাত্রী দল যায় মায়ান মারের রাখাইন সম্প্রদায়ের একটি গ্রুপ যারা দীর্ঘদিন বসবাস রত আছেন বড়বাইশদিয়ার তুলাতলিতে, যা মগ পল্লী নামে পরিচিত সেখানে।মগ পল্লীর লোকেরা ছিল খুবই আন্তরিক তারা তাদের হাতে বোনা চাদর এবং পুরো পল্লী ঘুরিয়ে দেখান এবং সবশেষে সকলের সাথে ছবি তুলেন।এর পরে অভিযাত্রী দল চলে যায় রাঙ্গাবালী উপজেলার একমাত্র সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মৌডুবী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।সেখানে স্যারদের সাথে মতবিনিময় শেষে সবাই মিলে ফটো শেসনে অংশগ্রহণ করেন।এর পরে অভিযাত্রী টিম চলে যায় সরাসরি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সমুদ্র সৈকত জাহাজ মারা।তখন বেলা প্রায় ১.০০ টা আর সাথে দীর্ঘযাত্রার পরে প্রচন্ড ক্ষুধা তা’ই দেরী না করে সবাই দুপুরের খাবার খেতে বসে যায়।খাবার হিসাবে আয়োজন ছিল মুরগি দিয়ে রান্না করা মিশ্র প্রোটিন ভুনা খিচুরী, সাথে ডিম এবং কোমল পানীয়। এর পরে জোহরের নামায শেষে হালকা বিশ্রাম নিয়ে অভিযাত্রী দল,আরাফাত হোসাইন মেহেদীর নেতৃত্বে তুফানিয়া একাদশ এবং এনামুল ইসলামের নেতৃত্বে জাহাজমারা একাদশে ভাগ হয়ে প্রিতি ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন। টান টান উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় তুফানিয়া একাদশ ৪-২ গোলে জয়লাভ করে।পরবর্তীতে বিজয়ীদলকে দূরবীন প্রকাশ থেকে প্রকাশিত বই “গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান এম.সি.কিউ সহকারে প্রকাশ” পুরস্কার হিসাবে প্রদান করা হয়। আর রানার্স আপ দলকে “সংখ্যায় সংখ্যায় তথ্য সমাচার ” বই প্রদান করা হয়। সবশেষে সৈকতের নানান মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অবলোকন এবং সূর্যাস্তের ঠিক পূর্ব মূহুর্তে সমবেত কন্ঠে ” এমন দেশটি কোথায় খুজে পাবে নাক তুমি, সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি” গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে গ্রান্ড মিট আপ প্রোগ্রামের কর্মসূচি শেষ করা হয় । আগামীতে অন্য কোথায়ও সেই অপেক্ষায় অভিযাত্রী দল…