বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন-বিএসটিআই’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাজারে থাকা অনুমোদিত ৫ টি ব্র্যান্ডের বোতল ও জারের পানি মানহীন এবং পান উপযোগী নয়।
পরীক্ষায় ফ্রুটস অ্যান্ড ফ্লেভার লিমিটেডের ‘ইয়ামি ইয়ামি’, সিনহা বাংলাদেশ ট্রেডস লিমিটেডের ‘এক্যুয়া মিনারেল’, ক্রিস্টাল ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘সিএফবি’, ওরোটেক ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির ‘ওসমা’ ও শ্রী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয় লিমিটেডের ‘সিনমিন’ নামের বোতলের পানি মানহীন এবং পান অনুপযোগী।’
এ পাঁচ কোম্পানির বিষয়ে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশে ১৫ টি ব্র্যান্ডের (জার ও বোতলের) খাবার পানি পরীক্ষা করে এ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। যার রিট আবেদনে আদালত পানি পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই শাম্মী আক্তারের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
পরে মো. জে আর খান রবিন সাংবাদিকদের বলেন, আদালত বাজারে থাকা বোতল ও জারের পানি পরীক্ষার নির্দেশ দিয়ে প্রতিবেদন চেয়েছিল। সে অনুযায়ী বিএসটিআই ১৫ টি বোতল ও জারের পানি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিয়েছে। যেখানে পাঁচটি ব্র্যান্ডের পানি মানহীন বা পান অনুপযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান বলেন, গত ৪ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি বিএসটিআই বাজার থেকে ২২ টি নমুনা সংগ্রহ করে। তার মধ্যে ১৫ টি নমুনা পরীক্ষা করে তারা প্রতিবেদন দিয়েছে।
এদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যে জানাতে বলেছেন আদালত। বাকি ৭ টি নমুনার প্রতিবেদনও আদালত দিতে বলেছেন। এছাড়া প্রতি দুই সপ্তাহে একবার বাজার থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে বিএসটিআইকে পরীক্ষা অব্যাহত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২২ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘প্রতারণার নাম বোতলজাত পানি’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ২৭ মে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন আইনজীবী শাম্মী আক্তার।
প্রাথমিক শুনানি শেষে ৩ ডিসেম্বর আদালত বাজারে থাকা ‘অবৈধ-অনিরাপদ’ জার ও বোতলের পানির সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেন। বিএসটিআই ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। আদালতের ওই আদেশের পর বিএসটিআই কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। এছাড়া প্লাস্টিক বোতল ও জারে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে সরকারের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। খাদ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সাত জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। গত সোমবার বাজারে থাকা জার ও বোতলের পানির গুনগত মান নির্ণয় করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১৪ জানুয়ারি আদালত বিএসটিআইকে পানি পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। সে অনুযায়ী বিএসটিআইয়ের প্রতিবেদন সোমবার(২১ জুন) আদালতে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতের নির্দেশে বিএসটিআই নিজস্ব সার্ভিলেন্স টিম পরিচালনা করে বাজারে থাকা মানহীন, অবৈধ ৩ হাজার ৯৭৯ টি পানির জার জব্দ ও ধ্বংস করে। মানহীন পানি অবৈধভাবে বাজারজাত করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ২৪ টি মামলাও করা হয়।