বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১২ অপরাহ্ন
এম এ কাইয়ুম::
“ভ্রমণে স্রষ্টার শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় মিলে”এই শ্লোগান কে ধারণ করে প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও “রাঙ্গাবালী ট্যুরিজম” ভ্রমণ পিপাসুদের নিয়ে আয়োজন করে গ্রান্ড মিট আপ-২০২২ এবং পারস্পরিক স্বাক্ষাৎ এর এক ব্যতিক্রমি অনুষ্ঠান। সারা বছরের দুঃখ,কষ্ট, এবং ভাল লাগা, না লাগা বিষয়গুলো পরস্পরের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য ব্যতিক্রমি এ আয়োজন। এবারের গ্রান্ড মিট আপ – ২০২২ এ অংশ গ্রহণকারী সম্মানিত সদস্যরা হলেন আব্দুল্লাহ তাহমিদ, মো.এনামুল ইসলাম,আলী আহাদ মুহাম্মদ মুজাহিদ, আবু তাইয়্যেব,মো.আইয়ুব হোসাইন,ফাহাদ খলিফা, শাহ মানজুর,জিহাদ খলিফা,আরাফাত হোসাইন মেহেদী, সাইদুর রহমান তানভীর, নাইম ইসলাম,ফেরদৌস আমীন, আব্দুল্লাহ, রেজাউল হাওলাদার, মাসরুর ইসলাম, মাহমুদ জামান ইমন, আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
এই আয়োজনে ছিল পারস্পরিক স্বাক্ষাৎ,ভ্রমণ,খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং একসাথে একই যায়গায় বসে খাবার গ্রহণ। দিনের সকল কর্মসূচি এবং যে যে গন্তব্যে ভ্রমণ করা হবে সে সকল বিষয়ের বিস্তারিত বর্ণনা সম্বলিত ম্যানুয়াল ও লাল সবুজের টি- শার্ট প্রদান করা হয় সম্মানিত সদস্যদের। সারাদিন ব্যাপী এ আয়োজন শুরু হয় রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ থেকে। সেসময় সকলের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাঙ্গাবালী ট্যুরিজম এর উপদেষ্টা আবু তাইয়্যেব তিনি বলেন মানুষ সারা বছর একগুঁয়ে কাজ করতে থাকলে তাদের মাঝে একগুঁয়ে ভাব তৈরী হয় এর কারণে দেখা দেয় মানসিক অসুস্থতা আর মানসিক এ অসুস্থতা থেকে পারিবারিক কলহ তৈরী হয় সুতারং সুন্দর পারিবারিক জীবনের জন্য হলেও ভ্রমণ করা প্রয়োজন।
এর পরে বক্তব্য রাখেন “রাঙ্গাবালী ট্যুরিজম ও রাঙ্গাবালী ফাউন্ডেশন” এর প্রতিষ্ঠাতা এবং দূরবীন প্রকাশন এর প্রকাশক” ও জিও পলিটিক্স বিশ্লেষক কলামিস্ট আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম। তিনি বলেন “ভ্রমণ একটি আনন্দময় ইবাদত এবং জ্ঞান প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার উৎস”।বিশেষ করে মানুষ মরনশীল কখন যে,কার ডাক চলে আসে তা’তো সুনির্দিষ্ট করে বলা যায় না! একজন মানুষকে সারা বছর ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নানান রকম কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। সারা বছর নানান রকম কাজে ব্যস্ত থাকলেও তার মন চায় আপন মানুষগুলোকে একটু কাছে পেতে,তাদের সাথে কুশল বিনিময় করতে সম্ভব হলে একসাথে এক যায়গায় বসে একটু খেতে। আমাদের সমাজের বেশির ভাগ মানুষেরই অর্থনৈনিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে তার পরেও প্রতি মাসে অল্প কিছু টাকা করে জমা করে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সবাই মিলে ভ্রমণ ও পারস্পরিক স্বাক্ষাৎ এর কোন আয়োজন করা সম্ভব হলে মানসিক প্রশান্তি লাভের পাশাপাশি নানান রকম বৈচিত্র্য পূর্ণ দৃশ্যও অবলোকন সম্ভব হয়।
এর পরে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন গ্রান্ড মিট আপ প্রোগ্রামের সভাপতি ও রাঙ্গাবালী সদর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম মাওলানা মো.আইয়ুব হোসাইন এবং যাত্রা শুরু হয় রাঙ্গাবালী ট্যুরিজম এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও রাঙ্গাবালী প্রেস ক্লাব এর মেধাবী সাংবাদিক নেতা এনামুল ইসলাম এর নেতৃত্বে। প্রথমে অভিযাত্রী দল স্থানীয় পরিবহন ভাড়ায় চালিত অটোগাড়িতে চরে চলে যায় গহীন খালীর বুড়া গৌরাঙ্গ নদীর তীরে। সেখান থেকে ট্রলার যোগে সকাল ৯.৩০ মিনিটে তেতুলিয়া নদীর উদ্দেশ্য রওনা হয় এবং ট্রলারে বসেই নদীর নানান বৈচিত্র্য পূর্ণ দৃশ্য অবলোকন করেন এবং হাতে থাকা ম্যানুয়াল থেকে”পরিচয়ে তেতুলিয়া নদী” শিরোনামে এ নদীর অতীত ও বর্তমান বিষয় সম্পর্কে পাঠ করা হয়।এরে পরে অভিযাত্রী দল চলে যায় চর মোন্তাজ এর মান্তা পল্লী এলাকায়। এরা হলো রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমেন্তাজ ইউনিয়নে এক মুসলিম সম্প্রদায় যাদের নৌকাতেই হয় বিয়ে ও সংসার এবং মৃত্যুও হয় নৌকায়। এ রকম একটি সম্প্রদায় যারা মান্তা নামে পরিচিত।সেখানে মতবিনিময় ও ফটোসেশান শেষে অভিযাত্রী দল রওনা হন সমুদ্রের বিশাল জলরাশি, বন ও চরাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট সোনারচরে।বলে রাখা ভাল এ সৈকতে দাঁড়িয়েও সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয়ের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। সেখানে নানান প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার পরে অভিযাত্রী দল মহা গর্জন ” আমরা সবাই কোনখানে, সোনার চরের মাঝখানে ” এই ইয়েল দিয়ে সোনার চরকে বিদয় জানিয়ে রওনা হন কলাগাছিয়া দ্বীপে। সেখানে ট্রলার পৌছতেই সময় তখন ১.৩০টা তাই দেরী না নামাজ শেষ করে দুপুরের খাবার শেষে হালকা বিশ্রাম নিয়ে অভিযাত্রী দল,সাইদুর তানভীর এর নেতৃত্বে কলাগাছিয়া একাদশ এবং আলী আহাদ মুজাহিদদের নেতৃত্বে সোনার চর একাদশে ভাগ হয়ে প্রিতি ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন। টান টান উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় সোনার চর একাদশ ৩-১ গোলে জয়লাভ করে।পরবর্তীতে বিজয়ীদলকে ফুটবল উপহার দেওয়া হয় এবং আর রানার্স আপ দলকে “দূরবীন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বই “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান এম সি কিউ সহকারে প্রকাশ “ও “তথ্য সমাচার” বই উপহার হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সবশেষে সৈকতের নানান মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অবলোকন এবং সূর্যাস্তের ঠিক পূর্ব মূহুর্তে সমবেত কন্ঠে ” এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনল যারা আমরা তোমাদের ভুলবনা” গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে গ্রান্ড মিট আপ প্রোগ্রামের কর্মসূচি শেষ করা হয় । আগামীতে অন্য কোথায়ও সেই অপেক্ষায় অভিযাত্রী দল…