নিজেকে ফর্মে ফেরাতে এর চেয়ে আর সঠিক সময় পেতেন না মুমিনুল হক। টেস্ট ব্যাটসম্যানের তকমা গায়ে এঁটে, টেস্টটাই খারাপ খেলছিলেন তিনি। ৪ টেস্ট আর ৮ ইনিংস মিলিয়ে বলার মতো কোনো স্কোর ছিল না। কিন্তু সেই মুমিনুলই আজ মেরে দিলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। এমন সময় সেঞ্চুরিটা পেলেন, যখন দল বিপর্যয়ে ছিল। তবে মুমিনুল দিন শেষ করে আসতে পারেননি। ১৬১ রানে ফিরে যান তিনি। ‘নাইটওয়াচম্যান’ তাইজুলের সঙ্গে উইকেটে রয়েছেন সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া মুশফিক।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৬ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। প্রথমে ইমরুল কায়েস। পরে লিটন দাস ও মোহাম্মদ মিঠুন। মহাবিপর্যয়! ব্যাট হাতে মুমিনুলের যে ফর্ম ছিল, তাতে তাঁর ওপরও খুব একটা ভরসা করতে পারছিলেন না কেউই। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে অসাধারণ একটা ইনিংসই খেললেন তিনি। চা বিরতির আগেই সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল। চা বিরতির পর টেষ্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিকুর রহিম। দিনের খেলা শেষ হওয়ার প্রায় কুড়ি মিনিট বাকি থাকতে তেন্দাই চাতারাকে উইকেট দেন মুমিনুল। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেট ২৯৫। মুশফিক (১১০*) ও তাইজুল ব্যাট করছিলেন।
মুমিনুলের ইনিংসে বাউন্ডারি ছিল ১৯টি। নিজের প্রথম ফিফটিটি তিনি তুলে নিয়েছিলেন ৯২ বলে। পরের ফিফটি তাঁর ৫৮ বলে। সেট হয়ে গেলে মুমিনুল কেমন, সেটি ভালোই বুঝেছেন জিম্বাবুইয়ান বোলাররা। শুরুতেই ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নিয়েছিলেন মুশফিক–মুমিনুল। চতুর্থ উইকেটে ২৬৬ রানের জুটি গড়েন দুই ব্যাটসম্যান।
সিলেট টেস্টের জুজু শুরুতে ঢাকাতেও তাড়া করেছে বাংলাদেশ দলকে। নয়তো যে মাঠ তাদের হাতের তালুর মতোই চেনা, সেখানে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে কেন সিলেটের রূপ দেখা গেল? ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর খুব দ্রুতই চলে গেল আরও ২ উইকেট।
দলীয় ১৩ রানে নিজের রানের খাতা না খুলেই প্রথম বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। জার্ভিসের বলে চাকাভাকে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর ৯ রান করে নেই লিটস দাস। সেই জার্ভিসের বলেই ব্রেন্ডন মাভুতার হাতে তুলে দিয়ে বিদায় নেন তিনি। অভিষিক্ত মোহাম্মদ মিঠুনও রানের খাতা খুলতে পারেননি। ডোনাল্ড তিরিপান্নোর বলে ব্রেন্ডন টেলরকে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।
মুমিনুল-মুশফিকের জুটিটাও থাকত না। প্রথমে জীবন পান মুমিনুল। চাতারার বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে চারসি ফেলে দেন তাঁর ক্যাচ। তিরিপান্নোর বলে মুশফিকও বেঁচে যায় স্লিপের সামনে বল পড়ায়। তবে প্রাথমিক চাপটাকে পেছনে ফেলে মুমিনুল-মুশফিক নিজেদের খেলাটা খেললেন দারুণভাবেই।
জিম্বাবুয়ের কাইল জার্ভিস ১৩ ওভার বল করে ৪০ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। চাতারা ১১ ওভারে দিয়েছেন ৭ মেডেন। ১৬ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। আসলে উইকেট বুঝে ঠিক জায়গামতো বোলিং করার ফলটা জিম্বাবুয়ে আজ প্রথম সেশনে ভালোভাবেই পেয়েছে। আর বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের বলি দিয়েছেন বাজে শট বাছাইয়ের মাধ্যমেই।