বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ দুই জনই। সেই দুই অস্ট্রেলিয়ানকেই এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) অধিনায়ক করেছে দুই দল। নিজেদের প্রথম ম্যাচের মুখোমুখিতে ডেভিড ওয়ার্নারের সিলেট সিক্সার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে স্টিভেন স্মিথের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে লো স্কোরিং ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৭ রান করে সাব্বির-তাসকিনদের দল সিলেট। জবাবে এক বল ও চার উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তামিম-ইমরুলদের কুমিল্লা। রোমাঞ্চকর ম্যাচের শেষ দুই বলে দরকার ছিল দুই রান। অলক কাপালির করা শেষ ওভারের পঞ্চম বলটি ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারিছাড়া করে দলের জয় নিশ্চিত করেন শহিদ আফ্রিদি।
মামুলি লক্ষ্যেও তামিমের উইকেট হারানোর পর শঙ্কায় পড়ে যায় কুমিল্লা। স্কোর বোর্ডে তখন ৬ উইকেটে ৯৭ রান। জয়ের জন্য তখনো দরকার ২১ বলে ৩১। কিন্তু এরপর আর কোন অঘটন ঘটতে দেননি আফ্রিদি। মোহাম্মাদ সাইফউদ্দিনকে নিয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন পাক অল-রাউন্ডার। তার নামের পাশে তখন ২৫ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে অপরাজিত ৩৯ রান।
২১ রানে ২ উইকেট হারালেও স্মিথ (১৬) ও শোয়েব মালিককে (১৩) নিয়ে ধীরলয়ে হলেও দলকে জয়ের পথে রাখেন তামিম। ৩৪ বলে একটি করে ছক্কা-চারে টাইগার ওপেনারের ৩৫ রানের ইনিংসটা মামুলি মনে হলেও লো স্কোরিং ম্যাচে এর মহত্ব অনেক বেশি। রান আউটের ভাগ্যে কাটা পড়েন তিনি। তবে তার গড়ে দেওয়া ভীতে দাঁড়িয়েই জয়ের কাব্য রচনা করেন আফ্রিদি। আরেক ওপেনার ইভিন লুইসের (৫) মত ব্যর্থ ছিলেন ইমরুল (০) ও এনামুল হক বিজয় (৫)।
মিডিল অর্ডারে দ্রæত ২ উইকেট তুলে নিয়ে দলকে জয়ের আবহ তৈরী করে দেন নেপালের তরুণ বিষ্ময় স্পিনার সন্দীপ লামিশেন। ২ উইকেট নিয়ে তাতে অবদান ছিল পেসার আল-আমিন হোসেনেরও। কিন্তু আফ্রিদির দিনে যে সবকিছুই ¤ø্যান প্রমাণ হয়ে গেল তা আরো একবার।
এর আগে মেহেদী হাসান, মোহাম্মাদ শহীদ ও সাইফউদ্দিনদের বোলিংয়ের সামনে ধুঁকতে থাকে সিলেট। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে সিলেট তুলতে পারে ২ উইকেটে ৩০। ২৩ রানে ২ উইকেট হারানো সিলেট ১১.৩ ওভারের মধ্যে ৫৬ রান তুলতে ৫ উইকেট হারায় মিডলঅর্ডারের ব্যর্থতায়। দুই তরুণ তৌহিদ (৮) ও আফিফ হোসেন (১৯) উইকেটে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। আফিফকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ফেরানোর পর তৌহিদকে তুলে নেন শহীদ আফ্রিদি। ১০ বলের ব্যবধানে দলীয় ৪৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে সিলেট। সাব্বির রহমান (৭) এসে মাত্র ৫ বল খেলে এই বিপদকে আরও ঘনীভূত করেন। মেহেদীর বলে উইকেটরক্ষক এনামুল হককে ক্যাচ দেন সাব্বির। ১২তম ওভার শেষে সিলেটের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ৫৯। এখান থেকে দলের হাল ধরেন ছয় ও সাতের দুই ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরান ও অলক কাপালি।
৩৫ বলে ৫৫ রানের জুটি গড়ে দলকে একটা পর্যায়ে নিয়ে যান। বিশেষ করে ক্যারিবীয় অল-রাউন্ডার পুরান ছিলেন বেশি ভয়ংকর। ২৬ বলে ৪১ রান করার পথে ২ ছক্কা ও ৫টি চার মারেন তিনি। মোহাম্মদ শহীদের করা ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলটি তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন পুরান।
১৯তম ওভারের শেষ বলে সাইফউদ্দিনকে তুলে মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দেন কাপালি (১৯)। শেষ ওভারে তাসকিনকেও তুলে নেন পেসার শহীদ। ১৫তম ওভার শেষে সিলেটের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ৮৬। এখান থেকে শেষ ৩০ বলে মাত্র ৪১ রান তুলতে পারে সিলেট। দ্রæত কয়েকটি উইকেট হারানোয় রানটা প্রতিপক্ষের নাগালের বাইরে নিতে পারেনি ওয়ার্নারের দল। তবে বোলারদের দৃড়তায় একেবারে ছেড়েও কথা বলেনি সিক্সার্স।